



সাশ্রয় নিউজ ★ নতুন দিল্লি: আগুনের গ্রাস থেকে বাঁচতে শেষ চেষ্টা করেও রক্ষা পেল না প্রাণ। মঙ্গলবার সকালে দিল্লির (Delhi) ১৩ নম্বর সেক্টরের একটি বহুতল আবাসনে বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডে (Delhi apartment fire) মৃত্যু হয় এক যুবক ও তাঁর দুই সন্তানের বলে উল্লেখ। মৃত যুবকের স্ত্রী ও বড় ছেলেও গুরুতর অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি। স্থানীয় মানুষজনের আতঙ্ক, এক মুহূর্তে ছারখার হয়ে গেল পাঁচ সদস্যের গোটা একটি পরিবার।
ঘটনাটি ঘটে সকাল ১০টা নাগাদ। তখনই হঠাৎ করেই অগ্নিকাণ্ড ছড়িয়ে পড়ে বহুতলের একটি ফ্ল্যাটে। দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় দমকলের আটটি ইঞ্জিন। তবে ততক্ষণে আগুন ভয়ঙ্কর রূপ নিয়েছে। ঘন কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায় গোটা অ্যাআপার্টমেন্টে। দমকলের কর্মীরা তৎপরতার সঙ্গে নামেন উদ্ধারকাজে। তবে অনেকটা সময় লেগে যায় আগুনের শিখাকে বাগে আনতে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের চোখের সামনে ঘটে যায় এই ভয়াবহ দৃশ্য। আগুনের হাত থেকে বাঁচতে অ্যাআপার্টমেন্টটি আটতলার বারান্দা থেকে হঠাৎ ঝাঁপ দেয় দু’টি শিশু। তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও চিকিৎসকরা দু’জনকেই মৃত বলে ঘোষণা করেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, ধোঁয়ার কারণে নিঃশ্বাস নেওয়ার উপায় ছিল না। আর ভিতরে আটকে পড়ে ভয় আর হতাশা থেকে এমন মর্মান্তিক সিদ্ধান্ত নেয় পরিবারটি বলে মনে করছে পুলিশ ও দমকল সূত্র।
সেই ঘটনার কিছুক্ষণ পরই ছেলেমেয়েদের পথ অনুসরণ করে ভবনের আটতলা থেকেই ঝাঁপ দেন একজন যুবক। তাঁকেও আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে, সেখানে তাঁকে চিকিৎসকরা তঁকেও মৃত ঘোষণা করেন বলে খবর। জানা যায়, যুবকই যশ যাদব (Yash Yadav)। তিনি নিহত দুই শিশুর বাবা।
যশের স্ত্রী ও বড় ছেলেও অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় গুরুতর আহত। তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বর্তমানে তাঁরা দিল্লির একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, মহিলার শরীরের বেশ কিছু অংশে আগুনের ছাপ রয়েছে। তাঁর অবস্থাও স্থিতিশীল নয়।
অগ্নিকাণ্ডের সঠিক কারণ এখনও পর্যন্ত স্পষ্ট নয়। তবে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকেই আগুনের সূত্রপাত। তদন্ত শুরু করেছে দিল্লি ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ। একই সঙ্গে বহুতলটির নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস সূত্রের খবর। এই মর্মান্তিক ঘটনার পরে বহুতলের বাকি বাসিন্দাদের সতর্কতার সঙ্গে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। অ্যাআপার্টমেন্টটিকে ঘিরে রাখা হয়েছে নিরাপত্তার ঘেরাটোপে। দমকল কর্মীরা এখনও ঘটনাস্থলে আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
শোকের আবহ স্থানীয় মানুষজনের ভেতর। এভাবে একটি পরিবার ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে গোটা এলাকায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ও দুঃখ দুই মিশ্র অনুভূতি। কারও চোখে জল। বারবার প্রশ্ন উঠছে, অ্যাআপার্টমেন্টটির নিরাপত্তা ব্যবস্থা আদৌ যথাযথ ছিল কি না! ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনা আর না ঘটে, তার জন্য দ্রুত পদক্ষেপের দাবি জানাচ্ছেন বাসিন্দারা।
ছবি : সংগৃহীত
আরও খবর : extramarital affairs : বিয়ের পরও অন্য প্রেম! ঘরে ঘরে কেন এমনটা ঘটছে?
