Sasraya News

DA : ডিএ নিয়ে জোড় কদম নবান্নে, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মানতে তৈরি হচ্ছে প্রযুক্তিগত কাঠামো

Listen

সাশ্রয় নিউজ ★ নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া মহার্ঘভাতা (ডিএ) দেওয়ার প্রক্রিয়ায় অবশেষে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে শুরু করল নবান্ন। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে ২৫ শতাংশ বকেয়া ডিএ আগামী ২৭ জুনের মধ্যে মেটাতে হবে বলে যে অন্তর্বর্তিকালীন আদেশ দেওয়া হয়েছে, তার বাস্তবায়নে এবার প্রযুক্তিগত পথে হাঁটছে রাজ্য প্রশাসন। সূত্রের খবর, সব দফতর ও স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলির কাছে কর্মচারীদের বিস্তারিত তথ্য জানতে চাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি তৈরি হচ্ছে একটি বিশেষ প্রযুক্তিগত ব্যবস্থা, যার মাধ্যমে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া হিসাব নির্ধারণ করা সহজ হবে। অর্থ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এই প্রযুক্তি ব্যবস্থার নকশা তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে একটি বেসরকারি সংস্থাকে।

এই ব্যবস্থায় রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা নিজেরা ‘ইন্টিগ্রেটেড ফিনানশিয়াল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’ (IFMS) পোর্টালে গিয়ে ২০০৯ সালের জুলাই থেকে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত তাঁদের কার্যকাল সংক্রান্ত তথ্য জমা দেবেন। ওই সময়সীমার মধ্যে যাঁরা অবসর নিয়েছেন, তাঁদেরও সেই তথ্য জানাতে বলা হবে। তথ্য সংগ্রহের পরে অর্থ দফতর নির্ধারণ করবে কে কত শতাংশ বকেয়া ডিএ পাবেন। অর্থ দফতরের এক আধিকারিক জানালেন, “এই প্রযুক্তিগত ব্যবস্থার মাধ্যমে শুধুমাত্র নির্ভুল হিসাব করাই নয়, বরং সুপ্রিম কোর্টে চার সপ্তাহের মধ্যে যে অগ্রগতি রিপোর্ট জমা দিতে হবে, সেটিও আরও নির্ভরযোগ্যভাবে তৈরি করা যাবে।”

গত ১৬ মে বিচারপতি সঞ্জয় কারোল এবং সন্দীপ মেহতার বেঞ্চ এই অন্তর্বর্তিকালীন নির্দেশে জানিয়েছিলেন, রাজ্য সরকারকে ছয় সপ্তাহের মধ্যে অন্তত ২৫ শতাংশ বকেয়া ডিএ কর্মচারীদের দিয়ে দিতে হবে। তার আগেই চার সপ্তাহের মধ্যে পদক্ষেপের বিস্তারিত বিবরণ জমা দিতে হবে দেশের শীর্ষ আদালতে। সেই সময়সীমা মেনেই সরকার প্রশাসনিক স্তরে প্রস্তুতি শুরু করেছে। এই নির্দেশকে অনেকে সরকারি কর্মচারীদের ‘আন্দোলনের জয়’ বলেই দেখছেন। তবে বিভ্রান্তি রয়েছে বকেয়ার সময়কাল নিয়ে। একাংশের দাবি, বকেয়া ডিএ ২০০৮ সালের ১ এপ্রিল থেকে প্রাপ্য, আবার আরেক অংশ মনে করছেন ২০০৯ সালের রোপা (ROPA) অনুযায়ী হিসাব হবে। সুপ্রিম কোর্ট ২০০৯ সালের রোপার ভিত্তিতে নির্দেশ দেওয়ায়, এখনকার হিসাবে ২০০৯-২০১৯ সময়কালকেই ধরা হচ্ছে বকেয়ার পরিসর হিসেবে।

বকেয়া ডিএ নিয়ে আন্দোলনরত ‘কনফেডারেশন অফ স্টেট গভর্মেন্ট এমপ্লয়িজ়’-এর সাধারণ সম্পাদক মলয় মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “আমরা আশাবাদী, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ রাজ্য সরকার যথাযথভাবে পালন করবে। যদি তা না করে, তবে মুখ্যসচিবের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করব।” বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির নেতা স্বপন মণ্ডলের মতে, “২৭ জুনের মধ্যে বকেয়া ডিএ মেটানোর নির্দেশ খুবই স্পষ্ট। আমরা আশা করব, রাজ্য শেষ মুহূর্তে কোনও রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত না নিয়ে নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যেই শিক্ষকদের ও কর্মচারীদের প্রাপ্য বুঝিয়ে দেবে। তা না হলে সরকারের আর্থিক ভারসাম্য এবং প্রশাসনিক বিশ্বাসযোগ্যতা বড়সড় প্রশ্নের মুখে পড়বে।” তবে এ নিয়ে তৃণমূল সমর্থিত ফেডারেশনের আহ্বায়ক প্রতাপ নায়ক মন্তব্য করতে চাননি।

বর্তমানে এই প্রযুক্তিগত উদ্যোগ সরকারের সদিচ্ছার ইঙ্গিত দিলেও, বাস্তবে কর্মচারীদের হাতে টাকা পৌঁছনোর পথ এখনও বেশ কিছু ধাপ পেরিয়ে যেতে হবে। এখন দেখার, আদৌ নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে কতটা কাজ শেষ করতে পারে নবান্ন এবং কর্মচারীরা তাঁদের প্রাপ্যর কতটা ফেরত পান।
ছবি : সংগৃহীত
পড়ুন : World Environment Day : বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালনের ইতিহাস

Sasraya News
Author: Sasraya News

Leave a Comment

Also Read