



নাট্য-ব্যক্তিত্ব ও সাহিত্যিক কুণাল কান্তি দে। লিখেছেন অজস্র ছোটগল্প। বেশ কিছু মূল্যবান পুস্তক প্রণেতা। নাটককে ভালবেসে জড়িয়ে থাকলেও তাঁর বিচরণ সাহিত্যের প্রায় সর্বত্রই। তিনি রবীন্দ্র জন্ম জয়ন্তীতে সাশ্রয় নিউজ-এর বৈশাখী রবীন্দ্রনাথ সংখ্যায় লিখলেন বিশেষ গদ্য…
তিনি আলোকবর্তিকা
কুণাল কান্তি দে
‘হে মোর চিত্ত, পূণ্য তীর্থে
জাগো রে ধীরে-
এই ভারতের মহা মানবের
সাগর তীরে।
হেথায় দাঁড়ায়ে দু-বাহু বাড়ায়ে
নমি নর-দেবতারে,
উদার ছন্দে পরমানন্দে
বন্দন করি তাঁরে।’
বাঙালীর গর্ব অহংকার তিনি। কেন তা সমগ্র বিশ্ববাসী জানেন। পৃথিবীর অন্যতম মিষ্ট ভাষায় সাহিত্য, সংস্কৃতি কৃষ্টির প্রতিভূ কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তিনি ঈশ্বর নন রক্ত মাংসের মানুষ। তাঁর সৃষ্ট কবিতা, গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ, অঙ্কন শিল্প, এবং অসাধারণ সঙ্গীত আমাদের সভ্যতাকে উর্বর করেছে। আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে তাঁর সৃষ্টির অবদান অতুলনীয়। সুখে, দুঃখে, হরষে, বিষাদে, প্রেমে, শোকে তিনি অহরহ আমাদের পাশে ঈশ্বরের মতো আমাদের ব্যথার নিরসন করে চলেছেন। আমাদের চলার পথে তিনি মসৃন আলোকিত করে এগিয়ে চলার প্রেরণা দিচ্ছেন।
_____________________________________________
আধুনিক বাংলার ঐতিহ্যে তাঁর নাম সর্বাগ্রে। মানবতাবোধ এবং লেখনী বুদ্ধিমত্তার আদর্শের সূচনা করেছেন। তিনি আমাদের অমূল্য সম্পদ।
_____________________________________________
উনিশ শতকে বাংলার নবজাগরণের ব্যটন হাতে নিয়ে বিশ্ব দরবারে খাতির শীর্ষে পৌঁছে দিয়ে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ পুরস্কার, সাহিত্যে নোবেল এনে দিয়েছেন। আধুনিক বাংলার ঐতিহ্যে তাঁর নাম সর্বাগ্রে। মানবতাবোধ এবং লেখনী বুদ্ধিমত্তার আদর্শের সূচনা করেছেন। তিনি আমাদের অমূল্য সম্পদ।
“মরন রে তুহু মম শ্যাম সমান” তাঁর জীবনে এত প্রিয়জনকে হারিয়েছেন, কল্পনা করা যায় না। তা সত্ত্বেও সাহিত্য সৃষ্টি তে ভাঁটা পড়তে দেননি। তাঁর প্রতিভা অনন্ত সূর্যের মত বলেই একের পর আঘাত সহ্য করেছেন। মাত্র আট বছর বয়সে গর্ভধারিনী “মা” কে হারিয়েছেন। শোক তাঁকে পরাস্ত করতে পারেনি। মাত্র বাইশ বছর বয়সে প্রিয়তমা বৌদিকে হারিয়েছেন। তারপরে হারিয়েছেন সহ ধর্মিণীকে। এরপর আবার আঘাত মাত্র বারো বছর বয়সের কন্যা কঠিন অসুখে চলে গেল। আঘাতে আঘাতে জর্জরিত কবিগুরু। কনিষ্ঠ পুত্র শমীন্দ্রানাথ চলে গেলেন অমরলোকে। সব হারিয়ে আঁকড়ে ধরে সাহিত্য সৃষ্টিতে ছেদ পড়েনি। তিনি যে রবীন্দ্রনাথ। তিনি আলোকবর্তিকা।
হে কবি তোমাকে জানাই প্রণাম।
অনন্তকাল ধরে তুমি থাকবে আমাদের অন্তরে। 🍁
ছবি : আন্তর্জালিক
