Sasraya News

Boiled Egg : শুধু ডিম সেদ্ধ নয়, প্রাতঃরাশ চাই পুষ্টিতে ভরপুর

Listen

পার্বতী কাশ্যপ ★ সাশ্রয় নিউজ : ঘুম থেকে উঠে এক কাপ চায়ের সঙ্গে একটি ডিম সেদ্ধ খাওয়া (Boiled Egg) অভ্যাস অনেকেরই। ব্যস্ত সকালে হালকা কিছু খেয়ে অফিস বা কলেজের দিকে ছুটে যাওয়া যেন জীবনের অংশ হয়ে উঠেছে। কিন্তু এই অভ্যাসই দীর্ঘদিন ধরে শরীরের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলে সতর্ক করছেন পুষ্টিবিদরা। অনেকেই মনে করেন, ডিম সেদ্ধ খেলেই প্রোটিনের জোগান হচ্ছে। কিন্তু শরীরের প্রয়োজন শুধু প্রোটিন নয়, আরও নানান পুষ্টিগুণের সমন্বয়েই তৈরি হয় সুষম আহার।

ছবি : প্রতীকী

বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, শুধুমাত্র ডিম সেদ্ধ খেয়ে দিনের শুরু করলে তা পরবর্তী সময়ে নানা জটিলতা ডেকে আনতে পারে। যেমন, কোষ্ঠকাঠিন্য, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগের আশঙ্কা, ক্লান্তি বা মনঃসংযোগের অভাব। পুষ্টিবিদ অনন্যা মিত্র (Ananya Mitra) বলেন, “ডিমে প্রোটিন, ফ্যাট ও কিছু ভিটামিন রয়েছে ঠিকই, কিন্তু ফাইবার ও কার্বোহাইড্রেট নেই। ফলে শরীরের সামগ্রিক চাহিদা পূরণ হয় না। অনেক সময় দেখা যায়, যাঁরা সকালে শুধু ডিম সেদ্ধ খান, তাঁরা দিনের মধ্যভাগে ক্লান্ত হয়ে পড়েন। মনোযোগ হারান। তাই প্রাতঃরাশে আরও কিছু পুষ্টিকর উপাদান থাকা প্রয়োজন।” ডিমের উপকারিতার কথা অস্বীকার করা হচ্ছে না। এটি অবশ্যই একটি পুষ্টিকর খাবার। ডিমে থাকে লুটেন (Lutein) এবং জিয়্যাক্সানথিন (Zeaxanthin) এই দু’টি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট। যা চোখের জন্য অত্যন্ত উপকারী। কিন্তু পুষ্টিবিদদের মতে, শুধু এই উপকারিতা দিয়ে দিনের গোটা প্রয়োজন মেটানো সম্ভব নয়। বিশেষ করে যাঁরা রক্তচাপজনিত সমস্যায় ভোগেন, তাঁদের জন্য সকালের খাবারে ফাইবার থাকা অত্যন্ত জরুরি। ফাইবার না থাকলে শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে, যা হৃদযন্ত্রের জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে।

নিউট্রিশনিস্ট রোহন সেনগুপ্ত (Rohan Sengupta) জানান, “অনেকেই ভাবেন, সকালে হালকা খেলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকবে। কিন্তু দিনের শুরুতেই যদি শরীর ঠিক মতো পুষ্টি না পায়, তাহলে মেটাবলিজম স্লো হয়ে যায়। এতে ওজন কমার বদলে বেড়ে যেতে পারে। তার চেয়ে বরং এমন খাবার খান, যা দীর্ঘক্ষণ পেট ভরিয়ে রাখবে এবং রক্তে চিনির মাত্রা স্থিতিশীল রাখবে।” ডিমে ফ্যাট ও প্রোটিন থাকলেও কার্বোহাইড্রেট নেই, যা শরীরের তৎপরতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। তাই একটিমাত্র ডিম সেদ্ধ কখনওই পূর্ণাঙ্গ প্রাতঃরাশ হতে পারে না। এর পরিবর্তে ডিমের সঙ্গে ওটস, হোলগ্রেন ব্রেড বা মিষ্টি আলু যোগ করলে প্রাতঃরাশ হবে আরও স্বাস্থ্যকর। এইসব খাবারে থাকা কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট এবং ফাইবার আপনাকে আরও দীর্ঘক্ষণ কর্মক্ষম রাখবে।

ছবি : প্রতীকী

আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। ভিটামিন-সি এই ক্ষমতা গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিন্তু ডিমে ভিটামিন-সি নেই। তাই সকালে ফল বা সবজি থাকা অত্যন্ত প্রয়োজন। একটি সুষম প্রাতঃরাশে কমলা, পেয়ারা, টমেটো বা শসা রাখলে শরীর পাবে প্রয়োজনীয় অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট ও হাইড্রেশনও বজায় থাকবে। পুষ্টিবিদদের পরামর্শ, “সকালে যদি ভারী ও সুষম খাবার খাওয়া যায়, তাহলে মধ্যাহ্নভোজে খানিকটা কম খেলেও শরীরের কোনও ক্ষতি হয় না। বরং মেটাবলিজম ঠিক রাখে বলেই দিনের পরের অংশে ক্লান্তি আসে না।”

প্রাতঃরাশকে দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আহার ধরা হয়। কারণ ঘুম থেকে ওঠার পর শরীর দীর্ঘ সময় কিছু না খেয়ে থাকে এবং এ সময়ই দরকার সর্বোচ্চ পুষ্টির জোগান। প্রাতঃরাশ যদি ফাইবার, প্রোটিন, ভালো ফ্যাট, ভিটামিন এবং কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ হয়, তবে শরীর ও মন সারাদিন ভালো থাকবে। তাই শুধু একটা ডিম সেদ্ধ নয়, সঙ্গে খান কিছু ফল, সবজি, ওটস বা দই। প্রয়োজনে সামান্য বাদাম, বা এক মুঠো ছোলা যুক্ত করুন। অভ্যেস বদলালেই বদলাবে শরীরের প্রতিক্রিয়া। ভালো থাকবেন আপনি, ভালো থাকবে আপনার কর্মক্ষমতা।বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মেনে চললে প্রাতঃরাশ হয়ে উঠতে পারে সুস্বাস্থ্য গঠনের এক অন্যতম স্তম্ভ। তাই এখন থেকেই ভাবুন, আপনার সকালের পাতে কি শুধু ডিম সেদ্ধ, নাকি পুষ্টিতে ভরপুর এক অনবদ্য শুরু?
ছবি : প্রতীকী
আরও পড়ুন : extramarital affairs : বিয়ের পরও অন্য প্রেম! ঘরে ঘরে কেন এমনটা ঘটছে? 

Sasraya News
Author: Sasraya News

Leave a Comment

Also Read