Sasraya News

Saturday, February 8, 2025

BJP : ভারতীয় জনতা পার্টি ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনে বিপর্যয়ের কারণ –

Listen

অগ্নিপ্রতাপ ★ সাশ্রয় নিউজ : গত ৪ ঠা জুন ২০২৪ পশ্চিমবঙ্গ লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণাকে কেন্দ্র সমস্ত কর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে টানটান উত্তেজনা ছিল। প্রথমদিকে তৃণমূল কংগ্রেস (TMC)  ও বিজেপি (BJP) সমান সমান থাকায় উত্তেজনার পারদ বাড়তে থাকে। বেলা বৃদ্ধির সাথে সাথে তৃণমূল কংগ্রেসের বেশিরভাগ কেন্দ্র থেকে ব্যবধান বাড়তে থাকে। গণনার ফলাফল শেষে তৃণমূল কংগ্রেসের লোকসভার আসন সংখ্যা দাঁড়ায় ২৯ টি।

(BJP) ভারতীয় জনতা পার্টি ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনে বিপর্যয়ের বিশেষ কয়েকটি কারণ রয়েছে ।

বিজেপি প্রথমে সমান সমান গেলেও সময় গড়ানোর সাথে সাথে পিছিয়ে পড়তে থাকে। গণনার ফলাফল শেষে বিজেপির লোকসভা আসন সংখ্যা দাঁড়ায় ১২ টি। আমাদের লোকসভা নির্বাচনের কড়চায় যার ভিত্তিতে তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিজেপি কত আসন পেতে পারে আলোচনা করা হয়েছে।

বিশ্লেষণ করা হয়েছিল শেষবার ভোটের শতাংশ হিসাব এবং বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের উপর। কিন্তু সবকিছুকে ছাপিয়ে গিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস অপ্রত্যাশিত ফলাফল করে এবং বিজেপি ধরাশায়ী হয়।

 

 

কিসের ভিত্তিতে এই ধরাশায়ী –

১) সাংগঠনিক দুর্বলতা বিজেপি ধরাশয়ী হবার একটি অন্যতম কারণ।

২) দুর্নীতি নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলেও তার স্বপক্ষে যুক্তি ও প্রমাণ সময় সাপেক্ষ।

৩) অপ্রত্যাশিত ভালো ফলের আশায় শুধু জনসভা থেকে বক্তব্য কিন্তু বুথস্তর থেকে কর্মী বা সংগঠন ঠিক না থাকায় মানুষের কাছে পৌঁছতে না পারা।

৪) স্থানীয় এলাকায় স্থানীয় প্রার্থী না করে প্রার্থীকে কেন্দ্র বদল করা একটা বড় কারণ।

৫) অন্য দল থেকে আসলেই তাদেরকে নিজ দলীয় প্রার্থী করা কর্মী এবং এলাকাবাসীর মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হওয়া একটি কারণ, ঠিক তেমনটাই তৃণমূল কংগ্রেসের ক্ষেত্রেও ঘটেছে (বিশ্বজিৎ দাস, কৃষ্ণ কল্যাণী, মুকুটমনি অধিকারী)।

৬) কেন্দ্রে বিজেপি সরকার থাকার ফলে রাজ্যের নেতৃবৃন্দ দম্ভ এবং অহংকারে ডুবে থেকে অসংলগ্ন কথাবার্তা বলতে থাকা।

৮) ২০১৯ সাল থেকে শুধুমাত্র পালের হাওয়ায় ক্ষমতা দখলের হাতছানি বিজেপি নেতৃত্বের যা কর্মী সমর্থকদের প্রতি দায়বদ্ধতার অভাব।

৯) বিভিন্ন ক্ষেত্রে সেটিং তত্ত্ব। বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এবং রাজ্য নেতৃত্ব এই সেটিং তত্ত্বের বিপক্ষে কোনও যুক্তি সম্মত বক্তব্য সঠিকভাবে মানুষের কাছে তুলে ধরতে ব্যর্থ।

১০) আদি ও নব্য লড়াই যা তৃণমূল কংগ্রেসকে অনেক সুবিধা করে দিয়েছে।

১১) লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, কন্যাশ্রী, যুবশ্রী, সবুজ সাথী, স্বাস্থ্যসাথী, বিবেকানন্দ স্কলারশিপ, স্কুল পড়ুয়াদের মোবাইল ট্যাব প্রদান প্রভৃতি সরকারি উন্নয়নমূলক প্রকল্প। তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগ, বিজেপি ক্ষমতায় এলে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার বন্ধ করে দেবে -এর বিরোধিতা করে দু-একজন বাদ দিলে দলগতভাবে রাজ্য বা কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব কোনও অবস্থাতেই মানুষের কাছে সরকারি টাকায় উন্নয়নের প্রকল্প বন্ধ করা হবে না পরিষ্কার বক্তব্য তুলে ধরতে পুরোপুরি ব্যর্থ।

১২) মানুষের কাছে সরাসরি জনসংযোগের অভাব।

১৩) ভোট কাটাকাটির অনুমানের ওপর ভিত্তি করে সব ঠিক আছে বলে চালিয়ে যাওয়া।

১৪) প্রথম থেকেই ভোটের হার কম থাকায় বাড়তি উদ্যোগ নিয়ে ভোটের হার কে বাড়াতে না পারার ব্যর্থতা।

১৫) অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস যা সকলের পক্ষেই খারাপ। ভোট যত গড়িয়েছে ততই তৃণমূল কংগ্রেস তার নিজের রণনীতি সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তন করেছে আর বিজেপি নেতৃত্ব ক্ষমতায় এসে গেছেন ভেবে সমস্ত দিকগুলি এড়িয়ে গেছে।

১৬) প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত ধৈর্য ও সহ্য ক্ষমতা যারা দেখাতে পেরেছেন তারাই এই নির্বাচনে জয় লাভ করতে সক্ষম হয়েছেন।

উল্লেখ্য, এহেন ক্ষেত্রে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দলটি নির্বাচন পরবর্তী সময়ে তাঁদের রাজনৈতিক রণকৌশল কোন কোন পর্যায়ে সংযোজন ও পরিমার্জন করে সেদিকেই লক্ষ্য থাকবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।

ছবি : সংগৃহীত 

Sasraya News
Author: Sasraya News

Leave a Comment