



জ্যোতিষশাস্ত্রী সোমনাথ আচার্য : আপনি যদি মাসে লাখ টাকা উপার্জনের স্বপ্ন দেখেন, তাহলে স্বপ্নটাই বদলাতে হবে না। বদলাতে হবে জীবনযাত্রা। কেবল উচ্চাকাঙ্ক্ষা থাকলেই চলবে না, লাগবে একরাশ ত্যাগ, একরত্তি জেদ, আর অসীম ধৈর্য। কারণ টাকা মানেই সফল্য নয়। তবে জীবনের প্রয়োজনে টাকা আবশ্যক। আর সেই প্রয়োজন মেটাতে চাইলে আত্মত্যাগের পথেই হাঁটতে হবে। প্রথমেই ভাবতে হবে, আপনি কাদের সঙ্গে সময় কাটান। আড্ডার টেবিলে যদি কেবল হাসি-ঠাট্টা আর গল্প হয়, তবে আপনার জীবনের লক্ষ্য গন্তব্যে পৌঁছতে অনেক দেরি হবে। প্রতিদিন আপনি যাঁদের সংস্পর্শে আসেন, তাঁরা যদি কেরিয়ার নিয়ে ভাবে, নতুন কিছু শেখে, পরিকল্পনা করে, তাহলেই আপনি তাঁদের কাছ থেকে প্রেরণা পাবেন। অন্যথায়, আপনার সময়টাই অপচয় হয়ে যাবে। এরপর আলসেমি আর অজুহাত নামক দু’টি শব্দকে জীবন থেকে মুছে ফেলতে হবে। অন্তত চার-পাঁচ বছর নিজের জীবনকে এমনভাবে সাজাতে হবে, যেন জেগে থাকা মানেই কাজের মধ্যে থাকা। টানা পরিশ্রমের ক্ষমতা তৈরি না হলে অর্থের প্রবাহ আসবে না। ঘুম থেকে ভোরে ওঠার অভ্যাস গড়তে হবে, যাতে দিনের শুরুটা হয় প্রোডাক্টিভ। ঘুম হোক পরিকল্পিত, যাতে শরীর-মন ঠিক রাখার পাশাপাশি কাজের সময়ও বাড়ে। ‘আগামীকাল করব’ এই স্বভাবটাই বদলাতে হবে। আপনি যদি এখনই শুরু না করেন, তবে সেই কাল আর আসবে না। জীবন যতটা সম্ভব কমফোর্ট জোন থেকে দূরে সরিয়ে নিতে হবে অন্তত পাঁচ থেকে সাত বছর। কারণ যারা শুধু আরাম খোঁজে, তারা পরিশ্রমের কঠিন পাঠ নিতে পারে না। আর পরিশ্রম ছাড়া বড় রোজগার একেবারেই অসম্ভব।
জীবন কখনওই শুধু মসৃণ পথে হাঁটে না। ঝড় এলেও, আলো একদিন ঠিক ফিরবেই। তাই নেতিবাচক মানুষের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলাই ভালোম। কারণ, নেতিবাচকতা কেবল মনোবল কমায়, উৎসাহ নয়। শরীরও বড় সম্পদ। আপনি যদি প্রতিদিন অন্তত এক ঘণ্টা হেঁটে বা দৌড়ে নিজের শরীরকে ফিট না রাখেন, তাহলে বড় আয়ের চাপে শরীর একদিন ভেঙে পড়বে। তাই ফিটনেসকে অগ্রাধিকার দিন। একইসঙ্গে জিহ্বাকেও সংযত করতে হবে।
আরও পড়ুন : Sexuality : সাফল্যের পথে কামনার কাঁটা: যৌন উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণই আসল শক্তি
রাগ এবং অহঙ্কারকেও সংযত রাখতে হবে। অনেক সম্ভাবনাময় উদ্যোগ শুধু এই দুইয়ের কারণে ভেস্তে যায়। সেই জেদটাই রাখুন, যা আপনাকে প্রতিদিন একটু করে এগিয়ে দেবে। আপনার কথার উত্তর কথায় নয়, কাজেই দিতে হবে। অনেক সময় অপেক্ষা করতে হয়। কিন্তু সেই অপেক্ষা সার্থক হয়, যদি আপনি ধারাবাহিকভাবে নিজের লক্ষ্যে কাজ করে যান।
পজিটিভ থাকাও অত্যন্ত জরুরি। জীবন কখনওই শুধু মসৃণ পথে হাঁটে না। ঝড় এলেও, আলো একদিন ঠিক ফিরবেই। তাই নেতিবাচক মানুষের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলাই ভালোম। কারণ, নেতিবাচকতা কেবল মনোবল কমায়, উৎসাহ নয়। শরীরও বড় সম্পদ। আপনি যদি প্রতিদিন অন্তত এক ঘণ্টা হেঁটে বা দৌড়ে নিজের শরীরকে ফিট না রাখেন, তাহলে বড় আয়ের চাপে শরীর একদিন ভেঙে পড়বে। তাই ফিটনেসকে অগ্রাধিকার দিন। একইসঙ্গে জিহ্বাকেও সংযত করতে হবে। জাঙ্ক ফুড নয়, পরিমিত আর স্বাস্থ্যকর খাবারই আপনাকে কর্মক্ষম রাখবে। আরও দরকার দক্ষতা। নিয়মিত পড়াশোনা, অনলাইন কোর্স, স্কিল ডেভেলপমেন্ট ট্রেনিং এসব আপনাকে আরও বেশি কর্মক্ষম করে তুলবে। পেশাগত প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে নিজেকে আপডেট রাখতেই হবে। প্রতিদিন যেটা শিখতে চান, যেটা করে সফল হতে চান, সেই কাজটাই করতে হবে রোজ। হাল ছেড়ে দিয়ে নয়, লেগে থাকলেই আসে ফল। এটাই বাস্তবতা। আপনি যদি সহজ কাজ বেছে নেন, জীবন একসময় কঠিন হয়ে উঠবে। আর যদি কঠিন কাজ করতে পারেন, তাহলে জীবন একদিন অনেক সহজ হয়ে যাবে। তাই তৈরি তো আপনি? মনে রাখবেন, কোটি টাকা আয় করা একটা রেজাল্ট। যার পেছনে থাকে হাজারো স্যাক্রিফাইস, নীরব লড়াই আর আত্মনিয়ন্ত্রণের কঠিন অধ্যায়। এবার শুরু করতে দেরি করবেন না। জীবনের প্রতিটি মুহূর্তই আপনাকে এক ধাপ এগিয়ে বা পিছিয়ে দিতে পারে। তাই এখনই নিজের অভ্যাস, আড্ডা, খাওয়া, ঘুম, শরীর আর মন সবকিছুকে গড়ে তুলুন এমনভাবে, যাতে আগামী দিনের আয় শুধু সংখ্যায় নয়, গৌরবেও ভরপুর হয়।
-প্রতীকী চিত্র
আরও পড়ুন : Self-motivation : আত্মখনন : সত্যের খোঁজ
