



পরিধি চক্রবর্তী ✪ সাশ্রয় নিউজ, মুম্বাই : বলিউডে (Bollywood) তারকাদের ব্যক্তিগত জীবন ঘিরে গুজব নতুন কিছু নয়। বিশেষত অভিষেক বচ্চন (Abhishek Bachchan) ও ঐশ্বর্যা রাই বচ্চন (Aishwarya Rai Bachchan)-এর সম্পর্ক নিয়ে গত এক বছর ধরে নানা ধরনের খবর ভাসছে বিনোদন জগতে। কিন্তু এ বিষয়ে এতদিন পর্যন্ত দু’জনের কেউই মুখ খোলেননি। এবার অভিষেক জানিয়েছেন, চুপ করে থাকাও অনেক সময় সমস্যার সমাধান নয়। অভিষেক বলেন, ‘‘সমালোচনার জবাবে মুখ বুজে থাকলেও তার ভুল অর্থ করা হতে পারে।’’ অর্থাৎ, কখনও কখনও নীরবতা থেকেও ভুল বার্তা পৌঁছে যেতে পারে মানুষের মনে। তিনি আরও বলেছেন, ‘‘মুখ বুজে থাকলেও তোমার হাবভাব, অঙ্গভঙ্গির নানা রকম অর্থ করা হতে পারে। আর যারা সমালোচক, তারা তা করতেই থাকবে। কারণ আড়ালে থেকে লোকের নিন্দা করা সহজ। কিন্তু যার সম্পর্কে কথাগুলো বলা হচ্ছে, তার জীবনটা তুমি দেখোনি, তুমি বুঝবে না, প্রতিটা শব্দ তার উপর কতটা প্রভাব ফেলছে।’’ তাঁর এই বক্তব্যে স্পষ্ট, দিনের পর দিন সম্পর্কের অবনতি নিয়ে গুজব শুনতে শুনতে তিনি কিছুটা বিরক্ত হয়েছেন।

যদিও এখনও পর্যন্ত অভিষেক বা ঐশ্বর্যা (Aishwarya Rai Bachchan) সরাসরি তাঁদের দাম্পত্যের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে কিছু জানাননি। তবে এই উপলব্ধি যেন তাঁর নিজের জীবনের অভিজ্ঞতারই প্রতিফলন। অভিষেকের কথায়, শুধুমাত্র তারকারাই নয়, সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রেও এই পরিস্থিতি কমবেশি দেখা যায়।মনো-সমাজকর্মী মোহিত রণদীপ (Mohit Ranadeep) জানাচ্ছেন, ‘‘গুজব বা সমালোচনা বা অপপ্রচারের ধরন কী রকম, বিষয়টি সম্পূর্ণ ভাবে তার উপর নির্ভর করবে।’’ অর্থাৎ, যদি কোনও গুজব বা সমালোচনা একেবারেই ক্ষতিকর না হয়, তবে তা নিয়ে প্রতিক্রিয়া না দেওয়াই ভাল। কারণ, তাতে কখনও কখনও সমালোচনার তীব্রতা কমে যায়। আবার কিছু গুজব থাকে, যা অতিরিক্ত মাত্রায় ছড়ালে তার সামাজিক ও মানসিক ক্ষতি হতে পারে। সে ক্ষেত্রে স্পষ্টভাবে ভুল ভাঙানো দরকার। মোহিত আরও বলেন, ‘‘কিছু গুজব বা অপপ্রচার এমন হয়, যা বেশি মাত্রায় ছড়ালে তার ক্ষতিকর প্রতিক্রিয়া হতে পারে। সে ক্ষেত্রে ক্ষতি আটকাতেই ভুল ভাঙানো জরুরি। কিন্তু যদি কেউ মনে করেন, গুজব, সমালোচনা বা অপপ্রচারে তাঁর কিছু আসবে যাবে না, তবে তা নিয়ে কোনও রকম প্রতিক্রিয়া না দেওয়াই ভাল। কারণ, অনেক ক্ষেত্রে নীরবতাই অনেক কিছু বলে যায়। তবে সব ক্ষেত্রে নীরবতা কার্যকরী না-ও হতে পারে।’’

অভিষেকের বক্তব্য থেকে পরিষ্কার, তারকারা যতই নীরব থাকুন, সমালোচনা থামে না। কখনও কখনও নীরবতা থেকেও জন্ম নেয় নতুন প্রশ্ন। তবে তাঁর কথায়, সমালোচনা করাই যাঁদের কাজ, তাঁরা তা করেই যাবেন। কারণ, আড়াল থেকে অন্যের জীবন নিয়ে মন্তব্য করা সহজ। কিন্তু যাঁর সম্পর্কে এইসব কথাবার্তা বলা হয়, সেই মানুষটির কাছে প্রতিটি শব্দের প্রভাব আলাদা। সমাজকর্মীরা বলছেন, এই কথা শুধু অভিনেতা বা অভিনেত্রীর ক্ষেত্রে নয়, সাধারণ মানুষের জীবনেও সত্যি। কর্মক্ষেত্রে হোক বা পরিবারে, অনাকাঙ্ক্ষিত সমালোচনা বা গুজব এলে প্রথমেই বিষয়টির প্রকৃতি বোঝা উচিত। যদি দেখা যায়, সেই গুজব ধীরে ধীরে আপনার ভাবমূর্তিকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে, তবে সঠিক সময়ে সত্যিটা স্পষ্ট করে দেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। আর যদি বোঝা যায়, সমালোচনায় কোনও বাস্তব ভিত্তি নেই ও তা নিয়ে মাথা ঘামানোর প্রয়োজন নেই, তবে নিঃশব্দেই নিজের কাজ করে যাওয়া উচিত। অভিষেক বচ্চন-এর অভিজ্ঞতা তাই নতুন করে ভাবাচ্ছে মানুষকে। চুপ থাকার কৌশল সব সময়ে যে সফল হয় না, তা বলিউডের এই অভিনেতাই মনে করিয়ে দিলেন।
সব ছবি : সংগৃহীত
আরও পড়ুন : Priyanka Chopra | ‘যা দেখছেন, সবটাই সত্যি নয়!’ ভার্জিনিটি বিতর্কে মুখ খুললেন প্রিয়াঙ্কা
